একজন ছাত্র উপজেলায় ফাঁকি দেওয়া বা কাজ না করে বেতন নেওয়ার নিয়ত করে মেডিকেলে ভর্তি হয় না। পাস করার পর নিরেট এক বাস্তবতার মুখোমুখি হয়। তৃণমূলে কোয়াক। উপরে অধ্যাপক। মাঝখানে এমবিবিএস চিকিৎসকের অমানুষিক পরিশ্রমের পরও কোনো অবস্থান নাই। তাকে জনগণের সংস্পর্শে যেতেই সম্পূর্ণ অরক্ষিত এক শ্বাপদ সংকুল জনপদে। কিছুটা রেহাই চাইলে করতে হবে পোস্টগ্র্যাজুয়েশন, সে আরেক অমানবিক পরিশ্রম। তখন উপজেলা বা গ্রামের চাকরিতে ন্যূনতম সময় দিয়ে শুরু হয় সেই কোর্স, তখন পড়াশোনাই তার লক্ষ্য হয়ে যায়।
কনসালটেন্ট হয়ে গেলে আবার আরেক সমস্যা। ছেলেমেয়ে বড় হয়ে যাচ্ছে। ভালো প্রতিষ্ঠান নেই। পড়াশোনা অনুযায়ী মূল্যায়ন নেই। বারো বছর একই পদে। আস্তে আস্তে আন্তরিকতা নষ্ট হতে থাকে। ঢাকায় পরিবারের পিছুটান। তারসাথে গৌণ ফ্যাক্টর ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের শিথিল নজরদারি। এসবের জন্য ক্যারিয়ার প্ল্যানিং ও সবার জন্য সমান সুযোগ অতীব গুরুত্বপূর্ণ। আমি উপজেলায় কর্মরত থাকা অবস্থায় একবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ও ডিরেক্টর আমাদের উপজেলায় যান। আমরা সুষ্ঠু ক্যারিয়ার প্ল্যানিং ও উপজেলা পর্যায়ে আবাসন ও নিরাপত্তার কিছু প্রস্তাব তৈরি করে প্রস্তুতি নিলাম।
মহাপরিচালক মহোদয় ঢুকেই একদিক থেকে ধমকাধমকি শুরু করলেন। আবার ধমকাধমকি দিয়েই শেষ করলেন। আমাদের প্রস্তাব, আমাদের মনেই রইল। অথচ আমি যে, ছয় বছর এই উপজেলায় ছিলাম। একজন চিকিৎসকের নামে কোনো অভিযোগ আসেনি। একটাও অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। কোনো কোনো উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা (ইউএইচএফপিও) শুধু মানুষ হিসেবে নয়, প্রশাসক হিসেবেও ছিলেন অনন্য। তাঁর মাঝে স্থানীয় সংসদ সদস্য জনসভা করে চিকিৎসকদের অকথ্য ভাষায় গালাগালি করলেন। কিছুদিন পর আবার আমাদের ডেকে বললেন, ‘আপনারা কিছু মনে করবেন না। জনগণকে উদ্দীপ্ত করার জন্য মাঠে-ঘাটে আমাদের অনেক কথা বলতে হয়।’
অনেক সময় গেছে। তবে প্রভাবশালীরা একই নীতিতে রয়ে গেছে এখনো, (কেউ আবার মাঝখান দিয়া অন্য কিছু মনে কইরেন না।) স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনার উন্নয়নে কী করা যায়?
ক. পদোন্নতির জন্য পোস্টগ্র্যাজুয়েশনের বাধ্যবাধকতা তুলে দিতে হবে।
খ. সর্বোচ্চ তিন বছরের মধ্যে চিকিৎসকদের বদলি করে পর্যায়ক্রমে উপজেলা, জেলা ও মেডিকেল কলেজে পদায়ন করতে হবে। চাকরি জীবনের বারো বছরের মধ্যেই অন্তত তিন বছর যেন মেডিকেল কলেজে কাটে।
গ. প্রত্যেক স্বাস্থ্যস্থাপনাকে ‘কি পয়েন্ট ইন্সটলেশন’ ঘোষণা করে, সে অনুযায়ী নিরাপত্তার ব্যবস্থা করতে হবে।
ঘ. নিয়মিত নজরদারি ও কঠোর শাস্তিবিধানের মাধ্যমে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে হবে। হঠাৎ কোনো কোনো জনপ্রতিনিধি এসে যেন কোনো নাটক সৃষ্টি করতে না পারে।
ঙ. স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের সাথে নিয়মিত মাসিক সভা করে সমস্যা চিহ্নিত করে সমাধানের উদ্যোগ নিতে হবে। এতে তাঁরাও বকাবকি করার চেয়ে, বরং সমস্যা সমাধানের চাপে থাকবেন।
চ. অন্য সার্ভিসের মতোই একটি নির্দিষ্ট সময়ান্তরে প্রত্যেকেরই দেশে-বিদেশে উন্নত প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা থাকতে হবে (পোস্ট গ্র্যাজুয়েশন না করলেও)।
ছ. চিকিৎসকদের দৈনন্দিন কার্যক্রমকে রাজনৈতিক প্রভাবের বাইরে রাখতে হবে। তাহলে এর দোহাই দিয়ে ফাঁকির সুযোগ কমে যাবে।
জ. কর্মস্থলে নিয়মিত উপস্থিতি, বিশেষ করে দুর্গম এলাকায় অবস্থানের জন্য বাড়িভাড়া না কেটে প্রণোদনার ব্যবস্থা করতে হবে।
ঝ. কোনো যন্ত্রপাতি কেনার আগে প্রশিক্ষিত জনবল নিয়োগ দিতে হবে।
ঞ. ধারণক্ষমতার বেশি রোগী ভর্তি বন্ধ করতে হবে, রোগীর যথাযথ চিকিৎসার স্বার্থেই।
ট. চিকিৎসকদের অধীনস্থ কর্মচারীদের ক্ষেত্রে তাদের নিরঙ্কুশ নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করতে হবে।
ঠ. কিছুদিন আগে এক হাসপাতালে পলস্তারা খসে গুরুতর আহত হন ডা. সুতপা রানী সাহা। এইসব বিপজ্জনক ভবন ও অবকাঠামোগুলো ভেঙে যথাযথভাবে নির্মাণ করতে হবে। এটাই এ মুহূর্তের সবচেয়ে বড় মেগা প্রজেক্ট হওয়া উচিত।
করোনাকালে স্বেচ্ছাসেবী কাজে বিশেষ অবাদান রাখায় শেখ হাসিনা ইয়ুথ ভলান্টিয়ার অ্যাওয়ার্ড ২০২০ পেয়েছেন ফরিদপুরের ডায়াবেটিক এসোসিয়েশন মেডিকেল কলেজের এমবিবিএস ফাইনাল প্রফের শিক্ষার্থী মো. আরমান হোসেন দীপ্ত।
বৃহস্পতিবার (৩০ ডিসেম্বর) ঢাকার ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতায় ‘ঢাকা ওআইসি ইয়ুথ ক্যাপিটাল ২০২০’ এর সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রথমবারের মতো এ পুরস্কার প্রদান করা হয়।
অনুষ্ঠানে বঙ্গভবন থেকে প্রধান অতিথি হিসেবে ভার্চুয়ালি অংশ নেন রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ। সভায় অতিথি হিসেবে আরও উপস্থিত ছিলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে এম মোমেন, আইসিওয়াইএফ'র সভাপতি তাহা আয়হান, মালদ্বীপের যুব, ক্রীড়া এবং সামাজিক ক্ষমতায়ন মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী আহমেদ মাহলুফ ও বাংলাদেশের যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব আখতার হোসেন প্রমুখ।
এ সময় অনুষ্ঠানে ‘মোস্ট ইন্সপ্রায়ারিং ভলান্টিয়ার স্টোরি’ ক্যাটাগরিতে শেখ হাসিনা ইয়ুথ ভলান্টিয়ার অ্যাওয়ার্ড গ্রহণ করেন মো. আরমান হোসেন দীপ্ত। তাঁকে পুরস্কার তুলে দেন যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী মো. জাহিদ আহসান রাসেল।
আরমান হোসেন দীপ্ত ফরিদপুর জেলার স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন অনুপ্রয়াসের সভাপতি। ২০১২ সাল থেকে তিনি বিভিন্ন সেবামূলক কাজের সাথে জড়িত। করোনাকালীন সময়ে জরুরি অক্সিজেন সেবা ও লকডাউনে অসহায় মানুষের কাছে খাবার পৌছে দেওয়াসহ বন্যার্তদের মাঝে জরুরি খাদ্য ও ওষুধ বিতরণে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন।
শেখ হাসিনা ইয়ুথ ভলান্টিয়ার অ্যাওয়ার্ড -২০২০ ছাড়াও করোনাকালে অবদান রাখার জন্য জাতিসংঘ স্বেচ্ছাসেবক আয়োজিত আইভিডি ভলান্টিয়ার অ্যাওয়ার্ড ২০২০, কোভিড-১৯ হিরো অ্যাওয়ার্ড, ইয়ুথ স্পিরিট অ্যাওয়ার্ড, ইয়ুথ ভলান্টিয়ার এক্টিভিজম অ্যাওয়ার্ডসহ বেশ কিছু সম্মাননা পেয়েছেন আরমান হোসেন দীপ্ত।
১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবস, বাংলাদেশের বিশেষ দিন হিসেবে প্রতি বছর রাষ্ট্রীয়ভাবে দেশের সর্বত্র পালন করা হয়। ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর দখলদার পাকিস্তানি বাহিনীকে পরাস্ত করে বিজয় অর্জন করে বাংলাদেশ। যেসব কীর্তিমান মানুষের আত্মত্যাগে এই বিজয় অর্জন সম্ভব হয়েছিল এই দিনে সারা দেশে তাদেরকে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানো হয়। তাই দিনটিকে গৌরবময় বিজয় দিবস হিসেবে উল্লেখ করা হয়।
বিজয়ের অনুভূতি সব সময়ই আনন্দের। তবে একইসঙ্গে দিনটি বেদনারও, বিশেষ করে যারা স্বজন হারিয়েছেন তাদের জন্য। অগনিত মানুষের আত্মত্যাগের বিনিময়ে আমাদের স্বাধীনতা। আমরা গভীর শ্রদ্ধায় স্মরণ করি মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের, যেসব নারী ভয়াবহ নির্যাতনের শিকার হয়েছিলেন, তাদের।
বাঙালি জাতির ইতিহাস হাজার বছরের পরাধীনতার ইতিহাস। দীর্ঘ আন্দোলন-সংগ্রাম এবং আত্মত্যাগের মধ্য দিয়ে ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসনের হাত থেকে ভারতীয় উপমহাদেশ স্বাধীন হলেও এই ভূখন্ডের বাঙালির স্বাধীনতা ও আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকার আসেনি। ১৯৪৭ সালে দ্বিজাতি তত্ত্বের ভিত্তিতে ভারত বিভক্ত হয় এবং পূর্ব বাংলাকে নিয়ে পাকিস্তান নামে একটি অসম রাষ্ট্রের সৃষ্টি হয়। তখন থেকেই পাকিস্তানের শাসক গোষ্ঠী বাঙালির উপর তাদের শাসন, শোষণ এবং নির্যাতন চালায়। অত্যাচার, অনাচার, জুলুম, নির্যাতনের বিরুদ্ধে, অর্থনৈতিক মুক্তির জন্য, বাংলা ভাষার জন্য ১৯৪৭ সালের পর থেকেই আন্দোলন শুরু হয়।
বাঙালির অবিসংবাদিত নেতা, বাংলাদেশের স্থপতি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে ধারাবাহিক আন্দোলন-সংগ্রামের মধ্যে দিয়ে জাতি ১৯৭১ সালে উপনীত হয়। ৭ মার্চ ১৯৭১ সালে বঙ্গবন্ধু রেডকোর্স ময়দানে তার অমর ভাষনে জাতিকে নির্দেশনা দিয়ে স্বাধীনতার পথকে সুগম করেন। লাখ লাখ মানুষের সমাবেশে দেওয়া ঐতিহাসিক ভাষণে বঙ্গবন্ধু বাঙালি জাতিকে মুক্তিযুদ্ধের জন্য প্রস্তুত থাকার নির্দেশ দেন। তিনি ‘ঘরে ঘরে দূর্গ গড়ে তুলে, যার যা কিছু আছে, তাই নিয়ে শক্রর মোকাবেলা করার আহ্বান জানান। বঙ্গবন্ধুর ডাকে সাড়া দিয়ে প্রস্তুতি নিতে থাকে বাঙালি জাতি। ২৫ মার্চ কালো রাত্রিতে আন্দোলনকামী বাংলার মানুষের উপর লেলিয়ে দেয়া পাকিস্তানী বাহিনী এক হত্যাযজ্ঞ শুরু করে। এই প্রেক্ষাপটে তাৎক্ষণিকভাবে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের বাড়ি থেকে প্রথম প্রহরে বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণা দেন। এর পরপরই বঙ্গবন্ধুকে গ্রেফতার করে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী। তখন থেকেই শুরু হয় মুক্তিযুদ্ধ, স্বাধীনতার যুদ্ধ।
দীর্ঘ ৯ মাস ধরে চলে এই যুদ্ধ। পাক হানাদার বাহিনী বাঙালির স্বাধীনতার স্বপ্নকে ভেঙ্গে দিতে শুরু করে চরম নির্যাতন ও গণহত্যা। নির্যাতন, গণহত্যার পাশাপাশি ধর্ষণ, শহরের পর শহর, গ্রামের পর গ্রাম জ্বালিয়ে দেয় পাকবাহিনীরা। বাংলাদেশ পরিণত হয় ধ্বংসস্তুপে। আধুনিক অস্ত্র-সস্ত্রে সজ্জিত পাকিস্তান সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে অদম্য কৃষক, শ্রমিক, ছাত্র, যুবক, নারীসহ সব শ্রেণী-পেশার সর্বস্তরের বাঙালি।
সর্বস্তরের মানুষ মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিলেও এদেশের কিছু মানুষ, জাতির কুলাঙ্গার সন্তান পাক বাহিনীর পক্ষ নেয়। রাজাকার, আল-বদর, আল-সামস বাহিনী গঠন করে পাক হানাদার বাহিনীর সঙ্গে গণহত্যা ও ধ্বংসযজ্ঞে মেতে উঠে। পরাজয়ের চুড়ান্ত পরিনতি বুঝতে পেরে বিজয়ের দুইদিন আগে জাতির সূর্য সন্তান বুদ্ধিজীবিদের বেছে বেছে হত্যা করে। এ কাজেও সহযোগিতা ও সরাসরি অংশ নেয় এ দেশীয় রাজাকার, আল-বদর, আল-সামস বাহিনী ও শান্তি কমিটির সদস্যরা।
স্বাধীনতার এই রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে বাংলাদেশের মানুষের পাশে দাঁড়ায় প্রতিবেশী দেশ ভারত। খাদ্য, আশ্রয়, অস্ত্র, সৈন্যসহ সার্বিক সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেয়। আন্তর্জাতিক পর্যায়ে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে বিশাল ভূমিকা রাখে রাশিয়া (তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়ন)।
জনাব মাশরাফি বিন মুর্তজার নড়াইল হাসপাতালের ঝটিকা সফর আমার কাছে একটা ইতিবাচক প্রয়াস বলে মনে হয়। আপনি যে নড়াইলবাসীর চিকিৎসার উন্নয়ন নিয়ে ভাবছেন, এটা খুবই ভালো কথা। তবে আপনার সফরের তরিকাটা ভুল।
আসলেই আপনি যদি কিছু করতে চান, তাহলে নড়াইল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. মো. আসাদ-উজ-জামান স্যারের টিমের সাথে একটা সারাদিনের (সকাল ৮ থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত) মিটিংয়ের ব্যবস্থা করুন। এই ধরনের মিটিংকে বলা হয় স্ট্র্যাটেজিক প্ল্যানিং মিটিং, যেমন: একটা টুর্নামেন্টের আগে আপনারা পুরো দলকে নিয়ে করে থাকেন।
মিটিংয়ের ভেন্যু হতে পারে চিত্রা রিসোর্টের সেমিনার কক্ষে। এই ধরনের মিটিং শুরু হয় সকালের নাস্তা দিয়ে, মাঝে মাঝে থাকে নিউট্রিশন ব্রেক ১০-১৫ মিনিটের, মধ্যাহ্ন ভোজ, বিকালের চা এবং সঙ্গে টাও।
পুরো মিটিংটা আপনি চাইলে নড়াইল এক্সপ্রেস ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে অনায়াসে স্পন্সর করতে পারেন।
নড়াইল এক্সপ্রেস ফাউন্ডেশনের ১ নম্বর গোল হলো: Health Care system Development in Narail. Please focus on it and start working on it.
প্ল্যানিং মিটিংয়ে তত্ত্বাবধায়ক ডা. মো. আসাদ-উজ-জামান স্যার হাসপাতালের পক্ষ থেকে ১১ জনের একটা একটা টিম নিয়ে আসবেন, যেখানে ডাক্তার, নার্স, এডমিন ও ক্লিনার সবার প্রতিনিধিত্ব থাকবে।
নড়াইল এক্সপ্রেস ফাউন্ডেশন থেকে আপনি, অনিক (Founder GS) এবং এলাকার শিক্ষক, উকিল, ইনজিনিয়ার, প্রাইভেট ফিজিসিয়ান ও রোগীর প্রতিনিধিসহ ১১ জনের একটি টিম থাকবে।
এম্প্যায়ার হিসেবে বাংলাদেশের হসপিটাল ম্যানেজমেন্ট বিশেষজ্ঞ দুই জন ডাক্তার স্যারকে আমন্ত্রণ জানাবেন যথাযথ সন্মানিসহ। এখানে আমি ডা. ব্রিগেডিয়ার জেনারেল নাসিরের নাম প্রস্তাব করছি, যিনি ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আমূল পরিবর্তন করেছেন।
মিটিংয়ে বসে সমস্যা শুনুন, সমাধান বের করুন। পাঁচ বছরের কৌশলগত পরিকল্পনা করুন। প্রতি ৩-৪ মাস পর পর ফলোআপ মিটিং করুন এবং সমস্যার সমাধান করুন।
তবে মনে রাখবেন প্রিয় ক্যাপ্টেন, স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থাপনা ৫ দিনের টেস্ট ম্যাচ নয়, এটি একটি দীর্ঘ (কমপক্ষে পাঁচ বছর) পরিক্রমা।
আপনার লিডারশিপ ক্যাপাবিলিটি আছে, সম্পদ আছে এবং কানেকটিভিটি আছে। মূলত এই জনসম্পৃক্ততাই হলো উৎপাদনশীলতা।
পরিশেষে বলবো, দেশের সেরা সন্তান ডাক্তারদের নিয়ে অহেতুক ভাইরাল ভিডিও না করে তাঁদেরকে সাহায্য করুন, যাতে নড়াইল হাসপাতাল দেশের একটি মডেল হাসপাতাল হিসেবে ভাইরাল হয়।
যানবাহনে দুর্ঘটনা পৃথিবীর সব দেশেই কম বেশি ঘটে থাকে। উন্নত বিশ্বেও ঘটে। তবে বাংলাদেশে যেসব দুর্ঘটনা ঘটে তার পুরোটাই অসাবধানতা এবং নিয়ম না মানার কারণে ঘটে। আর প্রতিবার এর শিকার হয় সাধারণ মানুষগুলো। এবারও তার ব্যাতিক্রম নয়।
লঞ্চের অগ্নিকাণ্ডে জীবন গেলে প্রায় ৪১ জন নিরীহ মানুষের। আরো শতখানেক মানুষ অগ্নিদগ্ধ হয়ে হয়তো কোন রকমে বেঁচে আছে। জীবনের বাকিটা সময় হয়ত বেঁচে থাকবে বিকলাঙ্গ হয়ে।
প্রাথমিক খবরে জানা গেল, লঞ্চটির ফিটনেস রয়েছে ২০২২ পর্যন্ত। কিন্তু নিউজ পেপারে ঘটনার বিবরণ পড়ে বোঝা গেল লঞ্চটিতে সেইফটি লেভেল ছিল শূন্যের ঘরে! লঞ্চটি কোনভাবেই নিরাপদ ছিল না।
লঞ্চের নিচতলার ইঞ্জিন রুমে রাখা ছিল প্রায় পনেরো বিশ ব্যারেল ডিজেল। যেখানে ইঞ্জিন চলে সেই একই ঘরে কিভাবে এতো পরিমাণ অত্যন্ত দাহ্য ডিজেল রাখা হয়? এভাবেই কি অন্য সব লঞ্চে ডিজেল রাখা হচ্ছে? তারপর ইঞ্জিন রুমের পাশেই ছিল কিচেন, যেখানে ব্যবহার করা হচ্ছিল সিলিন্ডার গ্যাস। ওই গ্যাস সিলিন্ডারের বিস্ফোরণেই আগুনের সূত্রপাত।
এতবড় একটি লঞ্চের পাশাপাশি দুইটি রুমে ইঞ্জিন, ২০ ব্যারেল ডিজেল আর অনিরাপদ গ্যাস সিলিন্ডার, আগুন তো লাগবেই।
এখন কথা হচ্ছে, সেইফটি অফিসার কিভাবে এই ধরনের অবকাঠামোগত ব্যবস্থার ছাড়পত্র দেয়? পৃথিবীর কোনো দেশেই এই ধরনের ব্যবস্থাকে সেইফ বা নিরাপদ বলবে না। এর ফলে কোনো ছাড়পত্রও দিবে না।
তেলের ব্যারেলগুলো খুব সহজেই রাখা যেত কিচেন থেকে দূরে একটি ফায়ারপ্রুফ কক্ষে।
খবরে জানা গেছে, আগুন নিচতলা থেকে ছড়িয়ে পড়ে ২য়তলায়। সেখানকার চায়ের দোকানে ছিল আরেকটি গ্যাস সিলিন্ডার। সেটারও বিস্ফোরণ ঘটে এবং ২য়তলায়ও আগুন ছড়িয়ে পড়ে।
আর এই আগুন নিয়ে লঞ্চটি চলতে থাকে। কি বিভৎস এক অবস্থা! লঞ্চে কি আদৌ কোনো ফায়ার এলার্ম ছিল? ইঞ্জিন রুমে থাকার কথা বেশ কয়েকটি অগ্নিনির্বাপক গ্যাস সিলিন্ডার। সেগুলোর কি কোন ব্যবহার হয়েছে? লঞ্চের ইঞ্জিন রুমের দায়িত্বে থাকা লোকটির কি যথাযথ অগ্নিনির্বাপনের ট্রেইনিং দেওয়া আছে?
আমার ধারণা এগুলোর কিছুই নেই। অন্যান্য লঞ্চেও হয়তো একই অবস্থা। তারপরও দেখা যাবে সব লঞ্চেরই হয়তো ফিটনেস রয়েছে! এ ধরনের ফিটনেসের কোনো ভ্যালু নেই। যেখানে সেইফটি কনসার্ন রয়েছে সেখানে কোনোভাবেই বলা যাবে না যে, যানটি ফিট।
গত ২৩ ডিসেম্বর লঞ্চে যে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটলো তা কোনোভাবেই নিছক দুর্ঘটনা নয়। এটা অব্যবস্থাপনার এক চেইন অব ইভেন্ট। এগুলোর সুরাহা না করলে এ রকম ঘটনা ভবিষ্যতে আরো ঘটবে। মাঝখান থেকে জীবন যাবে নিরীহ মানুষের।